বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শিকড়ের কবিদের কবিতায়
স্মরণ, শ্রদ্ধাঞ্জলি
সুবর্ণ জয়ন্তী
আবু জাফর সিকদার
বয়স পঞ্চাশ পূর্ণ হলো আজ তোমার!
কত রঙিন সাজে সেজেছো তুমি
তোমার ভৈরবীরাগ অনুরাগে
সোনার কাঁকন আর নূপুরের নিক্বণ
দশদিগন্তে বেজে উঠছে ঐ
ভরে উঠেছে আজ তোমার অতিথিশালা
বঙ্গভবন লাল গালিচা মোড়া
সংসদভবন থেকে গণভবন
প্রতিটি এভিনিউ, অলিগলি, রাজপথ হাসছে আজ আলোর ঝলকানিতে
সুউচ্চ ইমারতগুলোতে ফুলঝুরি আয়োজন।
মৃত্যু বিভীষিকার নয় মাস পেরিয়ে
পাঁচ দশক ধরে
হাঁটছি কেবল কানাগলির
পথে পথে।
আমি আজ দাঁড়িয়ে আছি
অজস্র না পাওয়া প্রতিশ্রুতির ভিড়ে
একটি লাল সবুজ পতাকা হাতে
তোমার সুবর্ণ জয়ন্তীর
এই মহেন্দ্রলগনে।
গণতন্ত্র
মুক্তি
স্বাধীনতা
সাম্য ও ন্যায় বিচার
মানবিক মর্যাদার দার কথা আজ
নতুন করে কী আর বলবো !
যুদ্ধ শুরুর কথা তুমি জানো,
যুদ্ধ জয়ের কথাও তোমার জানা।
একুশে,ঊনসত্তর, একাত্তর...
সাতই মার্চ, পঁচিশের কালোরাত
কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র,
ষোলশহরের প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ,আম্রকাননের বৈদ্যনাথ তলা
সবই তো তোমার অঙ্গসৌষ্ঠবে
জড়িয়ে আছে।
রক্তস্রোতে ভাসতে ভাসতে একাত্তরের ষোল ডিসেম্বর এলো
বিজয়ের উল্লাসে
মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দিলাম
তোমার লাল সবুজের আঁচল।
নাগরিক কোলাহলের ভিড়ে
ছোট্ট বদ্বীপ,
পদ্মা, মেঘনা, যমুনার জলে
বিধৌত পলি;
তোমার পবিত্র ভূমি জুড়ে
আজও শকুনি শ্যেনদৃষ্টি লোলুপ।
তোমার প্রতি কণা মৃত্তিকার কসম,
কসম জন্মদাত্রী মায়ের
এই স্বর্ণালি পঞ্চাশে ,
বজ্র নিনাদে
দীপ্ত শপথ
এখানে কেবল তোমার আঁচলই উড়বে!
পালিয়ে যাবে শকুন।
অযুত সহস্র বছর পরও
দেখে নিও
কেবল এখানে তোমার আঁচলই উড়বে!
কবি আবু জাফর সিকদার
আশির দশকে্র শক্তিমান কবিদের মধ্যে অন্যতম কবি আবু জাফর সিকদার। চিরহরিৎ বৃক্ষ ছায়ায় পাখপাখালির কলকাকলি আর পাহাড় ঘেরা চট্টলার সর্পিল সাঙ্গু নদীর এক বাঁকে নিভৃত পল্লী জননীর কোলে পিঠে বেড়ে উঠা কবি আবু জাফর সিকদার। একসময় স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে আশির দশকে কবিতার হাত ধরাধরি! নিয়তি আর জীবন যুদ্ধের নিরঙ্কুশ আধিপত্যে কবি আর কবিতারা এক সাথে হার মানে। তারপর একটানা ঘানি টানতে টানতে হাঁপিয়ে উঠা জীবন যেন শুষ্ক ঝরাপাতা! সেই পুরানো প্রেমে এখন আত্ম নিমগ্ন...এক নিভৃতচারী.! তিনি আবারও জেগে উঠতে চান কবিতার ভেতর। নাড়িরটান, লেখাপড়া, চট্টগ্রামেই। চাকুরী সুবাদে এখন ঢাকায় থাকা।
কবির প্রথম প্রকাশিত কবিতা “অপেক্ষা” (আশির দশক,মুক্তকণ্ঠ, লিটল ম্যাগ, চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত)। ঐ সময় প্রবন্ধ, ছড়া কবিতা প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন দৈনিক ও মাসিক পত্রিকায়।কলেজ জীবনই বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় হয়েছেন প্রশংসিত,পুরস্কৃত।
প্রকাশিত গ্রন্থ: একক কোন গ্রন্থ নেই । সংকলিত গ্রন্থ: কবিতার খাম (২০১৫ অমর একুশে গন্থমেলা,বাসাপ), কবিতায় বর্ষবরণ (২০১৫,বাসাপ), চেনাগলি চোরাবালা (২০১৬,বাংলার কবিতা প্রকাশন), ২১শে ফেব্রুয়ারি সংকলন (২০১৬,মাহবুব হাসান সম্পাদিত, বাংলার কবিতা)প্রকাশন),বলাকা ২য় খণ্ড(দুর্জয় বাংলা, ২০১৬) ছাড়াও অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ তে দুর্জয় বাংলা সাহিত্য ও সামাজিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত দুটি সংকলন গ্রন্থ কাব্য “ কবিতার দিনরাত্রি” এবং “ফুলঝুড়ি” সম্পাদন করেন। ২০১৭তে প্রকাশিত কয়েকটি কাব্য গল্প গ্রন্থে লেখা প্রকাশিত হয়।‘চেনাগলি চোরাবালা ২য় খণ্ড’(২০১৭,বাংলার কবিতা প্রকাশন)’অকাল সন্ধ্যায় বসন্ত’গল্প সংকলন(২০১৭,বাংলার কবিতা প্রকাশন),লতিফা কলস ১৬,বিভা পাবলিকেশন ,কলকাতা ২০১৭লতিফা কলস ১৭ ভাষাপ্রকাশ, এবং লতিফা কলস ১৮, জনপ্রিয় প্রকাশনী, ঢাকা উল্লেখযোগ্য। সমধারা প্রকাশনার নিয়মিত সংকলনেও নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে তার কবিতা। এছাড়া বাংলার কবিতপত্র,অন্যধারা নৃ,এবং মানুষ সহ বিভিন্ন প্রকাশনায় নিয়মিত ছাপা হচ্ছে কবিতা, ছড়া এবং সমালোচনামূলক নিবন্ধ। তিনি ষটপদী,,হাইকু,লিমেরিক, সিঙ্কেইন, তেপাটি সহ বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী অণুকবিতা চর্চা ও প্রসারে বিশেষ আগ্রহ নিয়ে কাজ করে চলছেন নিয়মিত।
কবিতা
পোড়াভিটার গান
একটা কবিতা যখন অপরিণত স্খলনের নান্দনিক পাঠ হয়ে ওঠে!
হয়ে ওঠে বলা ও বুঝার পরাবাস্তব শৈলীর কারুকাজ ; তখন কুশিলব সন্ধ্যার আলো আঁধারে,
পাছার উপর ঠেস দিয়ে বসা গিধড়ের মতো,
উল্লম্ফন সূচকে চিৎকার করতে থাকে কিংবা শিঙ্গারের আনন্দ প্রকাশে ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিশিকুটুম্ব !
তখন শেয়ারবাজার,রেমিটেন্স, জিডিপি, গণতন্ত্র, সাম্য,মানবিক মর্যাদা সবকিছুই, ঘরজামাই পুরুষের মতো, তথাগত উপযাচক হয়ে বেঁচে বর্তে থাকে। মারি স্বৈরতান্ত্রিকতা গণচেতনের দীর্ঘশ্বাসে ছড়িয়ে পড়া করোনার মতো বংশবৃদ্ধি করে চলো অহর্নিশি । আর কবিতা পড়ে থাকে আটপৌরে প্রেমিক প্রেমিকার বিদগ্ধমনের পোড়াভিটায়!
একদা স্বৈরাচারের সাইকেলে চড়া দেখেও যাদের মন ভরেনি...
ঢাকা রক্ষা ভেড়িবাঁধ,
মেঘনা গোমতী সেতু;
আরও কতো ঢোলের নয়ছয় বাদ্যধ্বনি..
ঢুকেনি কারও কর্ণকুহরে।
বিপ্লব স্পন্দিত বুকে সবাই তখন ঘোরতর গণতন্ত্রী!
কারফিউ ভাঙ্গার দায়ে পেটোয়ার লাঠিপেটা খাওয়া নির্বোধ গণতন্ত্রী! দিনে দিনে খুব বুঝে গ্যাছো গণতন্ত্র জলবৎ তরলং ;
তারে যে পাত্রে রাখা হবে সেই পাত্রের আকারে থাকতে সে ভীষণ ভালোবাসে! সে কেবল ক্লাসিক্যাল ড্যান্সের মুদ্রার মতো চর্চিত হতে থাকে নটরাজের সুরিখানায়...
সেখানে আবছায়ায় টুংটাং কোরাস সুরে বেজে ওঠে প্রাত্যহিক, পোড়াভিটার গান।
বিঁধেছিলো দুরন্ত কৈশোর
লজ্জাবতী কাঁটায়
গলায় ঝুলিয়ে পেণ্ডুলামের ঘড়ি
ফেলে এসেছো
যুগের পঞ্জিতে কয়েক যুগ
স্বপ্ন ডানায় খুঁজেছিলে
একরত্তি সুখ।
ক্ষয়ে যাওয়া চকের মতো
ছেলেবেলা, মেয়েবেলা...
গেছে হারিয়ে হাতে হাত ধরে
তেপান্তরে...
মেখেছিলে কিছু দুরন্তপনা
একমুঠো রোদ্দুরে
খুরধুলি উড়িয়ে
প্রিয় আঙ্গিনা জুড়ে হৈ হুল্লোড়,
দূর্বাঘাসে জমে থাকা
ফোটা ফোটা মুক্তোদানা
শুকিয়ে গেছে অনাদরে, অনায়াসে।
মনে আছে তোদের নিশ্চয়
পাশাপাশি বেঞ্চিতে বসা,
আড় চোখে তাকা,
মুখে কুলুপ আঁটা
বিঁধেছিল দুরন্ত কৈশোর
লজ্জাবতী কাঁটায়!
কখনও উচ্ছল,
কখনও উজ্জ্বল
হৃদয় অলিন্দে
রক্তের টগবগে নাচন
খড়কুটো কচুরিপানার মতো
নিয়ম করে ভেসে গেছি
সাঙ্গুর শীতল স্বচ্ছ জলে
তুমি, আমি, সে- আমরা
যার তার অতলান্ত মোহনায় ।
কে যেন কার সনে
দেখা করতো সংগোপনে!
নোট না কী চিঠি চালাচালি,
কানাকানি, ফিসফিসানি, উড়তো বাতাসে।
সব খবর মিশে গেছে ইথারে
কেউ কেউ জীবনের পাঠ চুকিয়ে
চলে গেছে পরবাসে।
যখন দক্ষিণের দরজায়
কপাট পড়লো একদিন
সবকিছু পেছনে রেখে
হেঁটে গেছিলে সদরে বন্দরে
কোলাহলে..
যৌবনের বলিরেখায়
বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে নগরবাসে
জমে উঠা কান্নার কোরাসে
কারও বা ভাগ্য বিধাতা মিটিমিটি হাসে।
খুঁজে ফিরি শেষ বিকেলে
ফুঁসে উঠা জোয়ারের জলে
গোধূলি আবির মেখে
ফিরেছি কৈশোরে, যৌবনে
জলতরঙ্গে ভাসাবো বলে
পুরাতন সেই ডিঙ্গিখানা।
অনুরাগে কিংবা অভিমানে
এখানে লেখা রবে
আশির দশকের অবিনাশী
সেই নান্দনিক ঠিকানা।
মরমে রূপালি চাঁদ
শীতের ঝরাপাতা সময়ে
বসন্ত এসেছিলো চুপিসারে আজ
ছিলো না তার চোখেমুখে অবগুণ্ঠনের লাজ
আঁধার কেটে সাঁতার কাটছে মরমে রূপোলি চাঁদ
অর্কিডগুলো ফুটেছিলো
কুয়াশা ঢাকা চাদরের গায়।
জ্যোৎস্নার মিতালি ঘিরে
এক ভাঙা হাটের যাত্রিক কয়জনে, আড্ডায় কূজনে
মেতে উঠে ফুলঝুরি আয়োজন।
এক হালি হাইকু
১.
রক্তের রাখি
কাঁটাতারে বেঁধে রাখি
ঝুলন্ত লাশ
২.
ফুলের মতো
ধীরে ধীরে শুকায়
জীবন যতো
৩.
পুষ্প কণিকা
বদলে দেয় রঙ
রূপের শিখা
৪.
গলে শুভ্রতা
কাঞ্চনজঙ্ঘার ঐ চূড়ায়
নদ খরস্রোতা
তেপাটি/ট্রিয়োলেট তেলগ্রস্ত
তেলের ডিব্বা হাতে নিয়ে ছুটছে যারা আজ
দেশের ক্ষতি দশের ক্ষতি না হয় গোল্লায় যাক
যারা ফায়দা লুটে তারা কর্তাবাবুর তাজ
তেলের ডিব্বা মাথা নিয়ে ছুটছে তারা আজ
হুমকি আসে, ধমকি আসে, গলাবে না নাক!
লোকে যত বলুক তাদের একটু হয় না লাজ।
তেলা মাথায় তেলই ঢালছে এটাই তাদের কাজ
দেশের ক্ষতি দশের ক্ষতি সেসব গোল্লায় যাক।
যদ্যপি ঘৃণার্হ
তোমার ভেতরে হান্দাইয়া গ্যাছে জল্লাদ
চাপাতি, খাপখোলা তলোয়ার কিংবা
হিংসার আগুনে শান দিচ্ছো খুনের নেশা
একগুচ্ছ রজনীগন্ধার বদলে তুমি বেছে নিয়েছো
ম্যাগাজিন ভরতি শিশার বারুদ।
শিশু যখন অনাথ হয়, অসহায় নারী যখন বিধবা
তুমি তখন অট্টহাসিতে ফেটে পড়ো মদের গ্লাসে।
বরশীতে মাছ ধরার মতো মানুষ ঝুলছে
তোমার ইচ্ছা অনিচ্ছার কৃতদাস হয়ে
একদিন ঠিক নেশার ঘোর কাটলে
পাকা কাঁঠালের ছ্যাবলার মতো তুমিও পড়ে থাকবে ঘৃণার্হ অনাদরে গুড়িয়ে ফেলা ভাস্কর্যের আস্তাকুঁড়ে
কাঞ্চনজঙ্ঘার আলোর বিচ্ছুরণ সেদিন ঢেকে যাবে...
কালো মেঘের সাততবক আস্তরণে।
তারপর একপশলা বৃষ্টিজলে ভিজে উঠবে মা,মাটি ও মানুষ।
মহানন্দার সবুজ শ্যামল প্রান্তরে আবাদ হবে নতুন ফসল।
প্রেম ও হেম
(আরশি সিঙ্কেইন)
প্রেম
পবিত্র, স্বর্গীয়
মানুষে, মানুষে, ঈশ্বরে
হৃদয়ে বাজে সুরের বীণা
অমর
হেম
শোভা মনোলোভা
মণিহার পরেছো গলায়
কার চেয়ে কে দামি
অলঙ্কার
মুক্তি
ফলজবৃক্ষের সাংবৎসরিক পুষ্পকলি
হেসে ওঠে আপন সৌরভে মৌমাছির পাখায়
কিংবা বিহগ বিষ্ঠায় উড়াল শেখে ঘুমন্ত বীজপত্র।
একফসলি বনস্পতির যৌবন বার্ধক্যে নুয়ে পড়ে
একই সমান্তরালে হাঁটে ঝরাপাতা, ভৌতিক মর্মরে
কবে কোন মৃত্যুবাণ মুক্তি আনে, তা কি কেউ জানে?
শীতঘুম
আমাকে কেউ চেনে না
আমি জাবর খাটতে খাটতে ঘাস খাই না,
দাঁড়িয়ে ঘুমাই না
ধুধু বালুচরে আছড়ে পড়া তরঙ্গের মতো
লাল কাঁকড়া ধরে টানাটানি করি না
অঘ্রাণে ঢেঁকিঘরে পাড়া দিয়ে
চাল গুঁড়ো করি না।
বেহুদা অনর্গল কথায় স্বপ্ন দেখি না
স্বপ্ন কাউকে দেখাইও না
রাজ্য লোপাট করি না
আমাকে কেউ চেনে না
চিনলেও কিছু আসে যায় না
আমি তো শীতল রক্তের প্রাণীর মতো
শীত ঘুমে বেঁচে বর্তে আছি।
যুদ্ধ
শত্রু ঘেরাও করেছে আকাশ
অগ্নি নৈর্ঋত।পূর্ব পশ্চিম থেকে আসছে
সাগরের বুকে ছিঁড়ে আসছে
পাহাড়ের চূড়া ডিঙ্গিয়ে আসছে
উপত্যকাগুলো ঘিরে ফেলেছে
জালের মতো বিছিয়ে দিয়েছে চকলেট বোমা
ড্রোন,আর্জেস গ্রেনেড আর
একে ফোর্টিসেভনের
ট্রিগারে আঙ্গুল রেখে ছুটে আসছে
জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে সৈন্যরা
পুড়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি
ধর্ষিতা হচ্ছে নারি।
না, ওসব কথার কথা!
পুকুরের তরঙ্গবিহীন জলের মতো
শান্ত সুবোধ বালকের মতো,
'শান্তি' দাঁড়িয়ে আছে
জলপাই রঙের ট্যাঙ্কের সামনে
অজস্র ফুল নিয়ে এসেছে
অবুঝ ভীত বিহ্বল কন্যারা
শিশুরাও পিছিয়ে নেই
অশীতিপর বৃদ্ধ, যোদ্ধারাও এসেছেন
সাদা পতাকা হাতে নিয়ে
কুম্ভকর্ণের চোখে রাজ্যের ঘুম
বীরশ্রেষ্ঠগণ আগে থেকেই কবরে!
তীর ধনুক হাতি ঘোড়া
ঢাল তলোয়ার
সব গেছে রসাতলে
যার যা কিছু আছে
জং ধরা পরিত্যক্ত,
ভঙ্গুর লৌহদণ্ডের মতো
নির্বীজ আছে পড়ে ।
তলে তলে ঘোষণাবিহীন
প্রস্তুতি নিয়ে পঞ্চমবাহিনীর তাবুতে
ওরা ঢুকে পড়েছে
পলাশির আম্রকাননের মতো
নীরবে, নিভৃত, রন্ধ্রে, রন্ধ্রে।